ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের (আইসিওএস) আহ্বানে ১৯৭৭ সাল থেকে ১৮ মে পৃথিবীব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব জাদুঘর দিবস। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনের সঙ্গে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ‘স্মৃতিগুলো গল্প শোনায়’ বা ‘জাদুঘর ও স্মৃতি’ এমন একটি প্রতিপাদ্য সেস্নাগান থাকবে সবার মুখে।
আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসটি পালনের বেশিদিন না হলেও জাদুঘরের ইতিহাস অনেক প্রাচীন খ্রিস্টের জন্মের ৩০০ বছর আগে মিসরের আলেকজান্দ্রায় টলেমি প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি, তিনি যার নাম রেখেছিলেন মিউজিয়াম। সেটিকেই বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম জাদুঘর। গ্রিকদের কলাবিদ্যার দেবী মিউজেসের মন্দিরকে এক সময় মিউজিয়াম বলা হতো। গ্রিক শব্দ মউজিয়ন থেকে এসেছে মিউজিয়াম শব্দটি। জাদুঘরকে এক সময় পন্ডিতশালাও বলা হতো। কালের পরিক্রমায় জাদুঘরে সাধারণত পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ও গবেষণার সূতিকাগারে পরিণত হয়। জাদুঘরের মধ্যদিয়েই সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারাকে চিহ্নিত করা যায়।
প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণে পোপ চতুর্থ মিঙ্টাম, পোপ ষষ্ঠ আলেকজান্ডার, এরপর দ্বিতীয় জুলিয়াম জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসকে একধাপ এগিয়ে নেয়। ভারতীয় উপমহাদেশে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আগে প্রায় ১০০ বছর পরের ঘটনা। ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি স্যার উইলিয়ামের উদ্যোগে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১৭৯৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জাদুঘর স্থাপনার কার্যক্রম শুরু হয়।
বাংলাদেশের ঢাকায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৩ সালের ৭ আগস্ট, তখন এর নাম রাখা হয় ঢাকা জাদুঘর। ষষ্ঠদশ শতকে ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণের চর্চা শুরু হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৬৮৩ মালে অঙ্ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ‘দ্য আলমোনিয়াম মিউজিয়াম’ প্রতিষ্ঠিত করা হয়। ঢাকা জাদুঘরটি ‘১৯৮৩ সালের ১৭ নভেম্বর জাতীয় জাদুঘর নামকরণ করা হয়।বাংলাদেশের প্রাচীনতম জাদুঘর হচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। বরেন্দ্র জাদুঘরে বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার পুরাকীর্তি রয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে জাদুঘরের সংখ্যা শতাধিক। জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলায় কাপসহাটিয়া অবস্থিত মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০০৮ সালে । ৩০ দশকে প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রমের সুত্র ধরেই মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘরের পথচলা ।
Hillol Sarkar এর ফেসবুক থেকে।