দক্ষতা এবং ন্যূনতম বিনিয়োগের সুবিধা না থাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কম মজুরিতে শ্রম বিক্রি করতে হয়। যা দারিদ্র বিমোচনের অন্তরায়। এ পরিস্থিতিতে সমাজে শিক্ষা গ্রহণে অপারগতা, বাল্যবিবাহ, পারিবারিক নির্যাতন, অপুষ্টি বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষ জনবল এবং সহায়ক কর্মপরিবেশ এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সাহায্য করতে পারে।
নগর দরিদ্রদের দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর স্থানীয় সরকার বিভাগ, ফরেন কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট অফিস, ইউএনডিপি এর সহযোগিতায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজ ভাষানটেক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাণবীশ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে উপকরণ ও সনদপত্র বিতরণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ সেলিম রেজা বলেন, আমাদের দেশ প্রতিনিয়ত উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। উন্নয়নের পথে নানা আয়োজনে আমরা সমৃদ্ধ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প নগর দারিদ্র হ্রাসে একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। এই প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনগুলো দরিদ্র বসতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমি এই কাজগুলো পছন্দ করি। যে কারণে অফিসিয়াল কাজের পাশাপাশি অন্যান্য কাজেও মাঝে মাঝে যুক্ত থাকার সাধ্যমতো চেষ্টা করি। তিনি বলেন, শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ ও সহায়ক পরিবেশে উপার্জন বাড়িয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা আনলেই দায়িত্ব শেষ হলো না। আমাদের সমাজ থেকে জঙ্গিবাদ, বাল্যবিবাহ, দূর্নীতি, নারী নির্যাতন দূর করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি মানবিক, উদার, বিজ্ঞানমনস্ক একটি উন্নত জাতি বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।
উল্লেখ্য যে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প এর অধীনে ভাষানটেক এলাকায় অবস্থিত দরিদ্র বসতিতে গঠিত ভোরের আলো ক্লাস্টারের বাছাইকৃত হতদরিদ্র সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষে ১৫০টি পাদানিসহ সেলাই মেশিন, ৩০টি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স, ৩০টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সনদপত্র, ১০টি বিউটি পার্লার বক্স প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে তাদের শ্রম এবং সময়ের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে বলা আশা করা যায়। যা তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা আনয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৯টি দরিদ্র বসতিতে কমিউনিটি টয়লেট, হাঁটাপথ, নর্দমা, সোলার লাইট ও ফায়ার হাইড্রেন্ট নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের চেক হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে জনাব মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান, প্রধান সমাজ কল্যান ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ সালেক মোল্লা, কাউন্সিলর ওয়ার্ড নাম্বার-১৫ সাহিদা আক্তার শিলা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, ওয়ার্ড নাম্বার-১৫ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মোঃ মারুফ হোসেন, টাউন ম্যানেজার এলআইউপিসি, প্রকল্প ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং জোহরা খানম, সোসিও ইকোনমিক এবং নিউট্রেশন এক্সপার্ট। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব ওয়াহেদুজ্জামান, ষ্টাফ অফিসার, সিইও, জনাব শফিউল আযম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, অঞ্চল-২, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, মোঃ জিয়াউল লতিফ, ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড হাউজিং এক্সপার্ট, সেলিনা বেগম, সভাপতি, টাউন ফেডারেশন, ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশন, সিডিসি ও ক্লাস্টার নেতৃবৃন্দ, প্রশিক্ষণ সমাপনী উপকরণ গ্রহণকারী এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ । অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, কমিউনিটি অর্গানাইজার এলআইইউপিসি প্রকল্প।