সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক হলেও বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে তামাক কোম্পানিগুলো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে একজন অধূমপায়ীর তুলনায় একজন ধূমপায়ীর করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশী। এসকল তথ্য জানার পরও তামাক নিয়ন্ত্রনে সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তামাক কোম্পানীগুলো সারা বছরজুড়েই বিভিন্ন কুটকৌশল অবলম্বন করে থাকে।
অথচ তামাক ওতামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হলো দাম বাড়িয়ে একে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে আনা। এতে একইসঙ্গে তামাকের ব্যবহার কমে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাংলাদেশে জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ তামাক কর কাঠামোর জন্য তা তামাক নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। তাই বাংলাদেশে কার্যকর তামাক কর ব্যবস্থার জন্য ‘জাতীয় তামাক কর নীতি’ প্রণয়ন জরুরি।
বহুস্তরভিত্তিক দুর্বল কর কাঠামো এবং তামাকজাত দ্রব্যের ধরণে বিচিত্রতার দরুণ দাম বাড়লে বিকল্প বেছে নেয়ার সুযোগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেখে সময়োপযোগী তামাক কর ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবী। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে সে লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি বিস্তৃত তামাক কর নীতি গ্রহণের কথা বলেছেন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণে অতি সত্ত্বর জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে। যার মধ্যে করারোপসহ, কর আদায় পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ, ট্রাকিং ও ট্রেসিং, কর ফাঁকি বন্ধ, আমদানি-রপ্তানি, তামাক করসংক্রান্ত প্রশাসনিক বিষয়াদিসহ তামাক করসংশ্লিষ্ট সকল বিষয়াদি যুক্ত থাকবে।
তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে প্রতিবছর সরকারের যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে, পরোক্ষভাবে তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত লোকদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য। তামাক সেবনের কারণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জিডিপিতেও।