ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ কর্তৃক আয়েজিত ১২ আগস্ট ২০২১ আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে “জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ ও নারীর উন্নয়নে তরুণদের ভাবনা” শীর্ষক বিকেল ৪ টায় জুম ওয়েবিনার টকশোর আয়োজন করেছে। উক্ত আলোচনা সভায় ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন এর সভাপতিত্বে শ্রী শান্তনু বিশ্বাসের সঞ্চালনায়, উক্ত সভায় আলোচনা করেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর শিক্ষার্থী মিফতাহুল জান্নাত রাখি; এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর শিক্ষার্থী স্বর্ণা বিশ্বাস ইতি; এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর শিক্ষার্থী শামীমা সাদিয়া ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর শিক্ষার্থী মদিনা ইসলাম।
বক্তারা বলেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের বিষয়টি স্বীকৃত সার্বজনীন মানবাধিকার এবং মানব উন্নয়নের সূচক। পরিবেশের সাথে জনস্বাস্থ্যের অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পর্ক রয়েছে। শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মানুষের মসৃণ ও অর্থপূর্ণ জীবন নির্ভর করে। এই স্বাস্থ্য মানে দুই পায়ের ওপর ভর দিয়ে কোনোমতে জীবন পার করে দেওয়া নয় বা হাতড়ে হাতড়ে জীবন বহন করাও নয়। সুস্থ, স্বাভাবিক, নীরোগ ও ভারসাম্যপূর্ণ শরীর তথা শারীরিক স্বাস্থ্য ও আনন্দময়, হাসি-খুশি, সংবেদনশীল সুখ সমৃদ্ধির সম্মিলিত অবস্থার নাম স্বাস্থ্য।
বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য উন্নয়নে নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্যের যোগানের জন্য ছাদ বাগান এবং সুপেয় পানি নিশ্চিত করা দরকার। এছাড়াও জলাধার ও জলজ পরিবেশ রক্ষা, খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য উম্মুক্ত স্থানের প্রয়োজন। পরিবেশ দূষণ করে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন হুমকির মধ্যে পড়বে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে শহর-নগরে হাঁটা ও অযান্ত্রিক যান-বাহন ব্যবহার মাধ্যমে করতে তরুণদের উদ্বুদ্ব করা। গণপরিসর নগরবাসীর সামাজিকীকরণ, বিনোদন, খেলাধুলা, মানসিক প্রশান্তি এবং শরীরচর্চার ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। যা নগরবাসীর সুস্থ্য জীবনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকজাত পণ্য ব্যবহার বন্ধ করতে দক্ষ যুবশক্তি তৈরি করে পরিবেশ সচেতন নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলার দরকার। যুব ও কমিউনিটিকে যুক্ত না করে জনস্বাস্থ্যকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সংবিধান ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ ও নারীর উন্নয়ন উপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে। এ
ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়ও উপরিক্ত বিষয় বাস্তবায়নের উপর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি’স) অন্যতম প্রতিপাদ্য হল: কাউকে পিছনে পেলে রাখা যাবে না। এসডিজি’স বাস্তবায়নে ও সফল করে তুলতে হলে বিশাল জনগোষ্ঠীর তরুণদের বাদ দিয়ে অসম্ভব হয়ে পড়বে। তরুণ প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ ও ইর্ন্টানশীপের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার সুযোগ দিতে হবে। সামাজিক অসঙ্গতি দূর করতে এবং তথাকথিত উন্নয়ন নামে পরিবেশ ধ্বংসের মতো কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে পরিবেশ সুরক্ষা করতে তরুণ প্রজন্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পারে। অতিমাত্রায় কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ এর কারণে জলবায়ু বিপর্যয়ে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি চরমভাবে হুমকির মুখে পড়ছে।
বক্তারা বলেন, যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এবং নারীর সহিংসতা বন্ধ করতে রাষ্ট্রের মূল-স্রোতধারার যুক্ত না করা হলে এবং নারীর উন্নয়নের ব্যাপারটিও প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে। তাই যুব সমাজকে যুক্ত করে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, সামাজিক অসঙ্গতি দূর করা ও পরিবেশ সংরক্ষণে রাষ্ট্রের কর্মকান্ডে সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্ট্র বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।