জামালপুরের বকশীগঞ্জে কমতে শুরু করেছে দশানী,জিঞ্জিরাম ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। পানি কমলেও বেড়েছে ভাঙ্গন। গত কয়েকদিনের প্রবল ভাঙ্গনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গাছপালা ও ফসলি জমি চলে গেছে নদীর পেটে। তলিয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন প্রকারের সবজি ক্ষেত ও ফসল। ভাঙ্গনের কারনে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী মানুষেরা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
জানা যায়,গত কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড তাপদাহের কারনে দশানী নদী , ব্রহ্মপুত্র নদ ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পানি কমতে শুরু হওয়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নদীর ভাঙ্গন। বিশেষ করে উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের শেখেরচর, মাইছেনির চর,ভাটি কলকিহারা, খেওয়ারচর, আউলপাড়া, বাঘাডুবা, নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের কুশলনগর,সাজিমারা,সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইড়মারী,কুতুবেরচর,বাংগালপাড়া, আইরমারী, খান পাড়া, চর আইরমারী, চর কামালের বাত্তী এলাকায় নদী ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারন করেছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশতাধিক বসত ভিটা। গাছপালা ও ফসলি জমি চলে গেছে নদীর গর্ভে। প্রতিদিন ভাঙছে বসতভিটা, রাস্তাঘাট-ফসলি জমি। প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নদীপাড়ের মানুষগুলো আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। কেউ আবার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ লুৎফর রহমান,খলিলুর রহমান,নুর ইসলাম,সাহা আলম বলেন,তারা সবাই কমবেশি নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন। তাছাড়া নদী তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থরা নিতান্তই অসহায়। অনেকের নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। কিন্তু ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। ত্রান নয় নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধান চান তারা।
এ ব্যাপারে মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান বলেন,উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি বন্যা কবলিত হয় মেরুরচর ইউনিয়নে মানুষ। প্রতিবছর বন্যায় বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নদীর পানি কমতে শুরু হলেও বেড়েছে ভাঙ্গন। বেশ কয়েকটি গ্রামে সরেজমিনে গিয়েছি,খোঁঝ খবর নিয়েছি ক্ষতিগ্রস্থদের। স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ,ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নিলাক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার বলেন,সাজিমারা ও কুশলনগর এলাকায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নদী গর্ভে চলে গেছে ফসলি জমি ও গাছপালা। নদী ভাঙ্গনরোধের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থায়ীভাবে সমাধান চায় এলাকাবাসী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বিক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান তিনি।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বলেন, বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক খবর রাখা হচ্ছে। নদীভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের সহযোগিতা এবং ভাঙ্গন রোধে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।