করোনায় বৃদ্ধ বয়সের মানুষ সবচেয়ে বেশী মারা যাচ্ছে। আর সবচেয়ে কম মারা যাচ্ছে বাচ্চা শিশুরা৷ এর একটা প্রধান কারণ দুঃশ্চিন্তা৷ বাচ্চাদের কোন দুঃশ্চিন্তা নেই, এবং চেতনায় তারা পুরোপুরি স্বাধীন।
আমাদের তৃতীয় নয়ন পিনিয়াল গ্লান্ড থেকে মেলাটোনিন নামক হরমোনের প্রভাবে আমাদের ঘুম আসে। এই মেলাটোনিন সূর্যের আলোর সাথে সম্পর্কিত। রাতে মেলাটোনিন দিনের তুলনায় ১০ গুণ বেশি সিক্রেট হয়। ফলে যারা রাতে ঘুমায় তাদের ঘুম, যারা দিনে ঘুমায় তাদের তুলনায় ১০ গুণ গভীর হয়। ঘুমের সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিশেষ সম্পর্ক আছে এই কথা সবার জানা। যাদের দুঃশ্চিতা বেশি তাদের মেলাটোনিন নামক ঘুম হরমোন কম সিক্রেট হয়। আর যারা মনকে প্রশান্ত রাখতে পারেন তাদের মেলাটোনিন নামক ঘুম হরমোন বেশি ও সঠিক সময়ে সিক্রেট হয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে মেলাটোনিনের উৎপাদন কমতে থাকে। সবচেয়ে বেশী মেলাটোনিন উৎপাদন হয় ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের (১৩৩ পিকো গ্রাম/মিলি)। আর সবচেয়ে কম উৎপাদন হয় ৭৫ বছরের বেশী বয়সী মানুষের (২৮ পিকো গ্রাম/মিলি)। তার মানে দাড়ালো শিশুদের মেলাটোনিন এর পরিমাণ বৃদ্ধদের তুলনায় প্রায় ১০ গুন। আর সবচেয়ে বেশী হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের, বিশেষ করে লাস্ট ট্রাইমেস্টারে। এর পর আছে শিশুদের স্থান।
মেলাটোনিন বাড়াবেন কিভাবে?
১) দুঃশ্চিন্তা কমাতেঃ নিয়মিত মেডিটেশন, ও প্রানায়াম করতে পারেন। এতে আমাদের মন প্রশান্ত হয়, তৃতীয় চক্ষু তথা পিনিয়াল গ্লান্ড এক্টিভ হওয়ার কারণে সঠিক সময়ে মেলাটোনিন সিক্রেট হয়।
২) রাতে রুম একদম অন্ধকার করে ঘুমাবেনঃ
গবেষনা মতে রাতে রুমে আলো থাকলে মেলাটোনিন কম নিঃসৃত হয়।
৩) ব্লু রে ( blue ray) যা লেপটপ, মোবাইল, ওয়াই ফাই থেকে নিঃসৃত হয় তা মেলাটোনিন এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। তুলসি পাতা Blue ray শোষন করতে পারে, তাই বাড়িতে তুলসি গাছ লাগাবেন। এবং নিয়মিত তুলসি অথবা তুলসি ফোঁটানো পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
৪) তাছাড়া কিছু খাবারে ট্রিপ্টোফ্যান থাকে।
ট্রিপ্টোফ্যান নামের একটা আম্যাইনো এসিড বা আমিষের উপাদান আছে, যা মূলোত মেলাটোনিন উৎপাদনে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। ট্রিপ্টোফ্যান পাওয়া যায় এমন খাবার হচ্ছে কলা, আনারস, কাঠ বাদাম, আখরট, চেরীফল, দুধ, দুধের তৈরি খাবার যেমন ঘি ছাচ ইত্যাদি।
এই সব খাবার নিয়মিত খেলে মেলাটোনিন মাত্রা সঠিক সময়ে বেড়ে যাবে।