বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনস্বাস্থ্য একটি সুতোয়গাঁথা। বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করতে হলে একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে, টেকসই সার্কুলার ইকোনমির (ফোর আর) দিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে সমন্বয় করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের বাজেটে যে থেকে বরাদ্দ দেয়া হয় তা একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে একটি জাতীয় ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি এ কথা বলেন।
ঢাকা কলিং প্রকল্পের উদ্যোগে আজ ১৯ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার, বেলা ১২ টায়, পার্লামেন্ট ক্লাব, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ-এর পরিবেশ, বন ও জলবায়ুপরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আইনী সীমাবদ্ধতা ও সুপারিশ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তানভীর শাকিল জয়, এমপি, সদস্য, পরিবেশবন ও জলবায়ুপরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডা. দিবা লোকসিংহ, নির্বাহীপরিচালক, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও চেয়ারপার্সন, কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবানপুওর (কাপ)।
বাংলাদেশ রূপকল্প ২০৪১ অনুসারে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশই নগরীতে বাস করবে এবং এই ৮০ শতাংশ জনগনের ২৫ শতাংশই বাস করবে মেগাসিটি ঢাকাতে। বর্তমানে ঢাকায় যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয় তার সিংহভাগই অসংগৃহীত থাকে যা পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকি। কঠিন বর্জ্যকে একটি আধুনিক ও সুষ্ঠুব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও তার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঢাকা কলিং প্রকল্প কাজ করছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫, পরিবেশ সংক্রাš Íসকল আইনের জন্য একটি ছাতার ন্যায় কাজ করলেও এখানে কঠিনবর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তেমন কিছু বলা নেই। কঠিনবর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আইনী বিধিমালা প্রণয়ন জরুরি। বিশেষ করে খসড়া কঠিনবর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ চূড়ান্তকরণ এবং যথাযথ পরিবীক্ষণের বিধান কঠিনবর্জ্য ব্যবস্থপনা বিধিমালায় রাখতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের বর্জ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্জ্যকে কমিয়ে আনা এবং একে সম্পদে রূপান্তরিত করায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা জরুরী বলে মনে করেন আবু নাসের খান, চেয়ারম্যান, পরিবেশবাঁচাও আন্দোলন (পবা)।
সুষ্ঠু পরিবেশ গঠন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ীকমিটি কাজ করছে বলে জানান রেজাউল করিম বাবলু, এমপি। তিনি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করে তৃণমূল পর্যায়ে এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে এনজিওর কাজকে সমর্থন করে তৃণমূলের তথ্য তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য এনজিওদের ধন্যবাদ জানান।
কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট আইন না থাকলেও পরিবেশ সংরক্ষণে যে সকল আইন বিদ্যমান তার যথাযথ প্রয়োগকতটুক ুহচ্ছে তা খতিয়ে দেখা দরকার এবং বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করণে এর বাণিজ্যিকিকরণ জরুরী বলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মত প্রকাশ করেন তানভীর শাকিল জয় এমপি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী বিশ বছরে প্রায় তিন কোটি লোক বাস্তুহারা হয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে নগরের বস্তিগুলোতে আশ্রয় নেবে যা নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরো শোচনীয় করে তুলবে বলে সভাপতির বক্তব্যে মত ব্যক্ত করেন ডা. দিবালোক সিংহ, নির্বাহী পরিচালক, ডিএসকে ও চেয়ারপারসন, কাপ।