জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ২নং বগারচর ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় স্বীকার করে নিয়ে দুই ডিলার মুচলেকা প্রদান করেছে ও চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ইউপি সদস্যরা ও সুবিধাভোগী স্থানীয় জনগণ। রোববার (২০ আগষ্ট) বগারচর ইউনিয়ন পরিষদে সুবিধাভোগীদের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণের অনিয়ম ধরা পড়লে এই ঘটনা ঘটে।
অনিয়মের দায় স্বীকার করে মুচলেকা প্রদান করেছেন ডিলার এ আর এন্টার প্রাইজের মালিক আঃ রহমান ও এস আলম এন্টার প্রাইজের মালিক সাইদুল ইসলাম সজিব। মুচলেকায় বলা হয় টিসিবির মালামাল বিতরনের লেবার/শ্রমিকদের অনিয়মের জন্য মোটামুটি ২০০ জন লোকের মালামালের ঘাটতি হয়েছে। আমরা এই মর্মে প্রতিশ্রুতি প্রদান করিতেছি যে, ঘাটতি মালামাল আমি/আমরা ২৩/০৮/২০২৩ ইং তাং রোজ বুধবার বেলা ১১:৩০ মিনিটের সময় বিতরন করব।
জানা যায়,পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সুবিধাভোগীরা ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির ডিলারের কাছ থেকে পণ্য নিতে আসলে বাড়ীর টেক্স রশিদ না থাকায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় ও সারাদিন অপেক্ষা শেষে তিনশ মতো সুবিধাভোগীদের পণ্য না দিয়ে পণ্য বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমাণিক মাসুমের কাছে গেলে তিনি নানা টালবাহানা শুরু করেন। এসময় সুবিধাভোগীরা চেয়ারম্যানের কক্ষসহ কয়েকেটি কক্ষে টিসিবির মালামাল দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। হাতে নাতে অনিয়ম ধরা পড়ায় তাৎক্ষনিক লেবার/শ্রমিকের উপর দোষ দিয়ে দুই ডিলার মুচলেকা প্রদান করেন। প্যানেল চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানসহ ১১ ইউপি সদস্য আলোচনা করে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুৎফুন নাহারকে অবগত করেন এবং পরিষদে চেয়ারম্যানের কার্যালয়সহ টিসিবির মালামাল রাখা কয়েকটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ২১ আগষ্ট উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় চেয়ারম্যানকে তালার চাবি ফেরত দেওয়া হয়। ইউপি সদস্য ও সুবিধাভোগীদের দাবী শুধু লেবার/শ্রমিক এই অনিয়ম করতে পারেনা এর সাথে চেয়ারম্যোন ও ডিলার সরাসরি জড়িত রয়েছে। তারা ধরা পড়ায় লেবার/শ্রমিকের উপর দোষ দিচ্ছে।
বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, মোসাদ্দেকুর রহমান মাসুম প্রামাণিক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক দুর্নীতি করেই চলছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, অশালীন কথাবার্তা, জনসাধারণের অর্থ আত্মসাৎ, ভিজিএফের চাল আত্মসাৎসহ চেয়ারম্যানের নিজ গ্রাম আলীরপাড়া গ্রামের কৃষক,শহীদ পরিবারের সন্তান আবুল কাশেম দুলালকে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যার ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে রয়েছেন।
বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমাণিক মাসুম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,অনিয়মের দায়ে ডিলার মুচলেকা প্রদান করেছেন যারা পণ্য পাননি তাদের বুধবারে পণ্য দেওয়া হবে। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর থেকেই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা মোকাদ্দমা করাসহ নানা ভাবে হয়রানি করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমার পরিষদের ১১ ইউপি সদস্য অনাস্থাপত্র দায়ের এবং সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের কোন অভিযোগের সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।